সরকারি কর্মকর্তা তথা যুগ্ম সচিব ও এর নিচের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সরকারি কাজে বিদেশ সফরে যেতে হলে তিন দপ্তরের অনুমতি নিতে হবে। এই তিন দপ্তর হলো নিজ মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সফর বা ভ্রমণের পর দেশে ফিরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সফরের বিস্তারিত উল্লেখ করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন দিয়ে জানাতে হবে।
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ ওই পর্যবেক্ষণসহ রায় দেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) এক চিঠির বৈধতা নিয়ে ২০১৬ সালে সার্চ অ্যান্ড ফগলাইট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জনি করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী ওমর আলী ওই রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেওয়া হয়।
ফগলাইট সিপটমেন্টের আগে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল (পিএসআই কমিটি) ২০১৫ সালে আমেরিকা সফরে যান বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। তিনিি বলেন, ‘কমিটিতে ছিলেন বিআইডব্লিউটিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, পরিচালক জ্ঞান রঞ্জন শীল, উপপরিচালক পঙ্কজ কুমার পাল ও সাধারণ ব্যবস্থাপক শওকত সরদার। এই পরিদর্শন দলের কার্যক্রম তদন্ত করে বিআইডব্লিউটিসি। তদন্তে দেখা যায়, পিএসআই কমিটি পরিদর্শনকালে ২০১৫ সালের জুন মাসে আমেরিকায় ফগলাইট পরীক্ষা করে, তখন গ্রীষ্মকাল ছিল। এর আগে তিন হাজার ওয়াটের ফগলাইট ছিল। জনি করপোরেশনের আনা ফগ লাইন সাত হাজার ওয়াটের, যা আগের মতোই আলো দেয়। ৬ কোটি টাকা দিয়ে আনা ১০টি ফগলাইট রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হয়েছে বলে ওই তদন্তে এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে হাইকোর্ট সরকারি কর্মকর্তা তথা যুগ্ম সচিব ও নিচের পদের কর্মকর্তার ক্ষেত্রে সরকারি কাজে বিদেশ সফরের বিষয়ে তিন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
বিআইডব্লিউটিসির আইনজীবী সাইফুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, রুল শুনানিতে প্রি শিপমেন্ট পরিদর্শনের প্রতিবেদনসহ কিছু তথ্য পর্যালোচনায় অসংগতি উঠে আসে। হাইকোর্ট রুল খারিজ করে দিয়ে ব্যাংক গ্যারান্টির অর্থ বিআইডব্লিউটিসির অনুকূলে নগদায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, আরিচা ও মাওয়ায় বিআইডব্লিউটিসি ফেরিতে সার্চ অ্যান্ড ফগলাইট লাগানোর জন্য ২০১৫ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ কাজ পায় জনি করপোরেশন। এর আগে প্রি শিপমেন্ট পরিদর্শনের জন্য চার সদস্যের প্রতিনিধিদল বিদেশ সফরে যায়। ১০টি ফগলাইটের জন্য ৬ কোটির ওই কাজে ব্যাংক গ্যারান্টি ছিল ২৮ লাখ টাকা। তবে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় ব্যাংক গ্যারান্টি অর্থ নগদায়নের জন্য বিআইডব্লিউটিসি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে চিঠি দিলে জনি করপোরেশন স্বত্বাধিকারী ওই রিট করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নূরুল। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাহাদুর সাহা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইফুর রশীদ
Leave a Reply